শনিবার, ২ মে, ২০২০

হুমায়ুন আজাদ

আমার কন্যার জন্যে প্রার্থনা

ক্রমশ সে বেড়ে উঠেছে পার্কের গাঢ়তম গাছটির মতোন।
ডাল মেলছে চতুর্দিকে, যেনো তার সংখ্যাতীত ডাল উপডালে
ভরে দেবে সৌরলোক- জোনাকিরা জ্বলে যাবে
পাখি এসে বসবে ডালে, অখণ্ডিত নীলাকাশ
বাতাসে পা ভর দিয়ে আসবে যাবে সন্ধ্যায় সকালে।
শিকড় বাড়াচ্ছে নিচে, জল চাই তার
মালির পরিমিত জলে গাছ বাঁচে কখনো আবার!

আগামী বৈশাখে
ষোলোটি বসন্ত এসে দিকে দিকে ভরে দেবে তাকে
সে একা দোকানে যাবে কিনে আনবে লিপস্টিক রুজ
মসৃণ দোপাট্টা ক্লিপ শ্যাম্পু জলপাই তেল
তিন বছর ধরে তার কিনতে হয় সেনিটারি মসৃণ টাওয়েল
দোকানে দোকানে ঘুরে চোখ থেকে লুকিয়ে সবার
কিনে নেবে মাপমতো একখানি সুস্নিগ্ধ ব্রেসিয়ার।

নীল গাঢ় মেঘমালা পুঞ্জপুঞ্জ ঝরে তার চুলে
অমিতব্যয়ী উদ্বাস্ত হাওয়ারা এসে তার দেহে বিভিন্ন শ্রেণীর
বাঁক হয়ে সুস্বাদু ফলের মতো ঝুলে
থাকে উদ্যমশীল কোনো পথিকের উদ্দেশে।

আমার ষোড়শী কন্যা কার কণ্ঠস্বর?
কার অলৌকিক স্বরমালা রটে যাচ্ছে সমস্ত প্রহর
তার মধ্যে? চুল তার গান গায়
নিবিড় শাওয়ার তলে পাঠাগারে শয্যাকক্ষে
সারাক্ষণ কে তাকে নাচায়। সে যে মানে না মানা
বাতাসে হারিয়ে আসে
স্থায়ী অস্থায়ী সবগুলো নিজস্ব ঠিকানা।
বুঝতে পেরেছি আমি কলেজের কোনো কক্ষে
নয়তোবা লাইব্রেরির নির্জন করিডোরে
কোনো যুবক এসে তার স্বপ্নাবলি
বিছিয়ে দিয়েই যাবে তার পদতলে
আমার কন্যা তার স্বপ্ন বুঝবে না কোনো দিন বুঝতে চাইবে না
সে-যুবক দগ্ধ হবে নিজস্ব নির্মম অগ্লিতে
ফিরে যাবে নিজ কক্ষে রুদ্ধ করে দেবে সব জানালা কপাট
তখন আমার কন্যা উচ্ছ্বসিত বান্ধবীর সাথে
সিনেমায় যাবে
ঘরে ফিরে এসে রাতে হেসে খিলখিল হবে
যুবকের নির্মম বেদনা সে কখনো বুঝতে পারবে না।

কাকে সে গ্রহণ করবে? কাকে দেবে নিজস্ব সৌরভ?
কার ঘরে সে আলো জ্বালবে দুর্ভেদ্য নিশীথে?
কার অসহ্য অভাবে
তার তরু পত্রপুস্প মাটিতে হারাবে?

এদেশ বদলে যাচ্ছে, যা-কিছু একান্ত এর
সবই নির্বিচারে নির্বাসিত হচ্ছে প্রতিদিন
ফ্রিজ ধরে রাখছে ঠাণ্ডা দিঘি সজীব শব্জিক্ষেত্রের স্মৃতি
হোটেলে সবাই খাচ্ছে গৃহ আর কাউকে আনে না
স্নেহময় শর্করার লোভে
বাঙলার মেয়েরা আজ রান্না জানে না
রক্তনালি অন্য রক্তময়।

আমার কন্যা যার ফ্ল্যাটে উঠবে, সে কি তার মন পাবে?
জয় করে নেবে তাকে? নাকি রঙিন টেলিভিশন দেখার সুখ পাবে
ঝলমলে ড্রয়িংরুমে বসে? রেডিয়োগ্রামে
কড়া বাদ্য বাথরুমে জল
বন্ধুর বক্ষলগ্ন লিপস্টিকে আলোকিত গোধূলিতে
বার বার বক্ষ থেকে খসে পড়বে সোনালি আঁচল।

আমার কন্যার ঘর ভেঙে যাবে প্রাত্যহিক সামান্য বাতাসে।
তবুও সে কাঁদবে না কেননা সে কাঁদতে শেখে নি,
হে আমার বন্ধ্যা কন্যা, অন্য কোনো হাত
তোমাকে কি তুলে নেবে মধ্যরাতে ভাসমান উৎসবস্রোত থেকে?
শেখাবে কান্নার অর্থ? বোঝাবে গভীর স্বরে
রোদনের চেয়ে সুখ নেই লবণাক্ত সবুজ মাটিতে?
বলবে মোমের আলো সর্বাত্মক গাঢ় অর্থময়
দ্বৈতশয্যা রচে যাচ্ছে দুই হাতে সৌর সময়।


ফুলেরা জানতো যদি
মুলঃ হেনরিক হাইনে

ফুলেরা জানতো যদি আমার হৃদয়
ক্ষতবিক্ষত কতখানি,
অঝোরে ঝরতো তাদের চোখের জল
আমার কষ্ট আপন কষ্ট মানি।

নাইটিংগেল আর শ্যামারা জানতো যদি
আমার কষ্ট কতখানি-কতদুর,
তাহলে তাদের গলায় উঠতো বেজে
আরো বহু বেশি আনন্দদায়ক সুর।

সোনালি তারারা দেখতো কখনো যদি
আমার কষ্টের অশ্রুজলের দাগ,
তাহলে তাদের স্থান থেকে নেমে এসে
জানাতো আমাকে সান্ত্বনা ও অনুরাগ।

তবে তারা কেউ বুঝতে পারে না তা-
একজন, শুধু একজন জানে আমার কষ্ট কত;
আমার হৃদয় ছিনিয়ে নিয়েছে যে
ভাংগার জন্য- বার বার অবিরত।
আমার অশ্রু
মূলঃ হেনরিক হাইনে

আমার অশ্রু এবং কষ্টরাশি থেকে
ফুটে ওঠে ফুল থরে থরে অফুরান,
এবং আমার দীর্ঘশ্বাসে
বিকশিত হয় নাইটিংগেলের গান।

বালিকা, আমাকে যদি তুমি ভালোবাসো,
তোমার জন্য সে ফুল আনবো আমি-
এবং এখানে তোমার দ্বারের কাছে
নাইটিংগেলেরা গান গাবে দিবাযামি।

তুমি হাতখানি রাখো
মূলঃ হেনরিক হাইনে

প্রিয়তমা, তুমি হাতখানি রাখো আমার গুমোট বুকে।
শুনতে পাচ্ছো শব্দ? কে যেন হাতুড়ি ঠুকে চলছে?
সেখানে এক মিস্ত্রি থাকে, যে বানিয়ে চলেছে
এক শবাধার।
কার জন্যে জানো? - আমার, আমার।

উল্লাসে বিদ্বেষে নিরন্তর সে হাতুড়ি
ঠুকছে দুই হাতে,
কিছুতে ঘুমোতে পারছি না আমি,
দিনে কিংবা রাতে।

মিস্ত্রি, দ্রুত করো, তুমি কাজ
শেষ করো তাড়াতাড়ি,
যাতে আমি অবশেষে শান্তিতে ঘুম যেতে পারি।

সেই কবে থেকে

সেই কবে থেকে জ্বলছি
জ্বলে জ্বলে নিভে গেছি বলে
তুমি দেখতে পাও নি।

সেই কবে থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাতিস্তম্ভের মতো ভেঙে পড়েছি বলে
তুমি লক্ষ করো নি।

সেই কবে থেকে ডাকছি
ডাকতে ডাকতে স্বরতন্ত্রি ছিঁড়ে বোবা হয়ে গেছি বলে
তুমি শুনতে পাও নি।

সেই কবে থেকে ফুটে আছি
ফুটে ফুটে শাখা থেকে ঝরে গেছি বলে
তুমি কখনো তোলো নি।

সেই কবে থেকে তাকিয়ে রয়েছি
তাকিয়ে তাকিয়ে অন্ধ হয়ে গেছি বলে
একবারো তোমাকে দেখি নি।

আত্মহত্যার অস্ত্রাবলি
রয়েছে ধারালো ছোরা স্লিপিং টেবলেট
কালো রিভলবার
মধ্যরাতে ছাদ
ভোরবেলাকার রেলগাড়ি
সারিসারি বৈদ্যুতিক তার।

স্লিপিং টেবলেট খেয়ে অনায়াসে মরে যেতে পারি
বক্ষে ঢোকানো যায় ঝকঝকে উজ্জ্বল তরবারি
কপাল লক্ষ্য করে টানা যায় অব্যর্থ ট্রিগার
ছুঁয়ে ফেলা যায় প্রাণবাণ বৈদ্যুতিক তার
ছাদ থেকে লাফ দেয়া যায়
ধরা যায় ভোরবেলাকার রেলগাড়ি
অজস্র অস্ত্র আছে
যে-কোনো একটি দিয়ে আত্মহত্যা করে যেতে পারি

এবং রয়েছো তুমি
সবচেয়ে বিষাক্ত অস্ত্র প্রিয়তমা মৃত্যুর ভগিনী
তোমাকে ছুঁলে
দেখলে এমনকি তোমার নাম শুনলে
আমার ভেতরে লক্ষ লক্ষ আমি আত্মহত্যা করি।

ভালো থেকো

ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল, ভালো থেকো।
ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা।
ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা।
ভালো থেকো।

ভালো থেকো চর, ছোটো কুঁড়েঘর, ভালো থেকো।
ভালো থেকো চিল, আকাশের নীল, ভালো থেকো।
ভালো থেকো পাতা, নিশির শিশির।
ভালো থেকো জল, নদীটির তীর।
ভালো থেকো গাছ, পুকুরের মাছ, ভালো থেকো।
ভালো থেকো কাক, কুহুকের ডাক, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মাঠ, রাখালের বাঁশি।
ভালো থেকো লাউ, কুমড়োর হাসি।
ভালো থেকো আম, ছায়া ঢাকা গ্রাম, ভালো থেকো।
ভালো থেকো ঘাস, ভোরের বাতাস, ভালো থেকো।
ভালো থেকো রোদ, মাঘের কোকিল,
ভালো থেকো বক, আড়িয়ল বিল,
ভালো থেকো নাও, মধুমতি গাঁও, ভালো থেকো।
ভালো থেকো মেলা, লাল ছেলেবেলা, ভালো থেকো।
ভালো থেকো, ভালো থেকো, ভালো থেকো।

বিজ্ঞাপন: বাঙলাদেশ ১৯৮৬

হ্যাঁ, আপনিই সেই প্রতিভাবান পুরুষ, যাঁকে আমরা খুঁজছি।
যদি আপনার কোনো মগজ না থাকে, শুধু পেশি থাকে
যদি আপনার কোনো হৃৎপিণ্ড না থাকে, শুধু লিঙ্গ থাকে
যদি আপনার কোনো ওষ্ঠ না থাকে, শুধু দাঁত থাকে
তাহলে আপনিই সেই প্রতিভাবান পুরুষ, যাঁকে আমরা খুঁজছি
যদি আপনি অবলীলায়, একটুও না কেঁপে, শিশুপার্কে
একঝাঁক কবুতরের মতো ক্রীড়ারত শিশুদের মধ্যে একের পর এক
ছুঁড়ে দিতে পারেন হাতবোমা।
যদি আপনি কল্লোলমুখর একটা কিন্ডারগার্টেনে পেট্রল ছড়িয়ে
হাসতে হাসতে আগুন লাগিয়ে দিতে পারেন প্রাতঃরাশের আগেই
এবং পকেটে হাত রেখে সেই দাউদাউ অগ্নিশিখার দিকে
তাকিয়ে খুব স্থিরভাবে টানতে পারেন ফাইভ ফিফটি ফাইভ
হ্যাঁ, তাহলে আপনিই সেই প্রতিভাবান পুরুষ, যাঁকে আমরা খুঁজছি।

যদি আপনি প্রেমিকাকে বেড়াতে নিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণের পর
খুন করে ঝোপে ছুঁড়ে ফেলে একশো মাইল বেগে সাইলেন্সারহীন হোন্ডা
চালিয়ে ফিরে আসতে পারেন ন্যাশনাল পার্ক থেকে
কলাভবনের বারান্দায় যদি আপনি অকস্মাৎ বেল্ট থেকে ছোরা টেনে নিয়ে
আমূল ঢুকিয়ে দিতে পারেন সহপাঠীর বক্ষদেশে,
যদি আপনি জেব্রাক্রসিংয়ে পারাপাররত পথচারীদের ওপর দিয়ে
উল্লাসে চালিয়ে দিতে পারেন হাইজ্যাক করা ল্যান্ডরোভার
তাহলে আপনিই সেই প্রতিভাবান পুরুষ, যাঁকে আমরা খুঁজছি

যদি আপনার ভেতরে কোনো কবিতা না থাকে, শুধু হাতুড়ি থাকে
যদি আপনার ভেতরে কোনো গান না থাকে, শুধু কুঠার থাকে
যদি আপনার ভেতরে কোনো নাচ না থাকে, শুধু রিভলবার থাকে
যদি আপনার ভেতরে কোনো স্বপ্ন না থাকে, শুধু নরক থাকে
তাহলে আপনিই সেই প্রতিভাবান পুরুষ, যাঁকে আমরা খুঁজছি
যদি আপনি পিতার শয্যার নীচে একটা টাইমবোম্ব ফিট করে
যাত্রা করতে পারেন পানশালার দিকে,
যদি আপনি জননীকে ঠেলে ফেলে দিতে পারেন টাওয়ারের
আঠারো তলার ব্যালকনি থেকে
যদি আপনি আপনার এলাকার ফুলের চেয়েও রূপসী মেয়েটির মুখে
এসিড ছুঁড়ে তাকে রূপান্তরিত করতে পারেন
পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিত দুঃস্বপ্নে
তাহলে আপনিই সেই প্রতিভাবান পুরুষ, যাঁকে আমরা খুঁজছি

হ্যাঁ, আপনাকেই নিয়োগ করা হবে আমাদের মহাব্যবস্থাপক
আপনার ওপর ভার দেয়া হবে সমাজের
আপনার ওপর ভার দেয়া হবে রাষ্ট্রের
আপনার ওপর ভার দেয়া হবে সভ্যতার
আপনার খাদ্য হিসেবে বরাদ্দ করা হবে গুদামের পর গুদাম ভর্তি বারুদ
আপনার চিত্তবিনোদনের জন্যে সরবরাহ করা হবে লাখ লাখ স্টেনগান
আপনিই যদি হন আমাদের আকাঙ্ক্ষিত প্রতিবাবান পুরুষ
তাহলে, পোস্টবক্স: বাঙলাদেশ ১৯৮৬-তে
আজই আবেদন করুন।

আমার কুঁড়েঘরে

আমার কুঁড়েঘরে নেমেছে শীতকাল
তুষার জমে আছে ঘরের মেঝে জুড়ে বরফ পড়ে আছে
গভীর ঘন হয়ে পাশের নদী ভরে
বরফ ঠেলে আর তুষার ভেঙে আর দু-ঠোঁটে রোদ নিয়ে
আমার কুঁড়েঘরে এ-ঘন শীতে কেউ আসুক

আমার গ্রহ জুড়ে বিশাল মরুভূমি
সবুজ পাতা নেই সোনালি লতা নেই শিশিরকণা নেই
ঘাসের শিখা নেই জলের রেখা নেই
আমার মরুভূমির গোপন কোনো কোণে একটু নীল হয়ে
বাতাসে কেঁপে কেঁপে একটি শীষ আজ উঠুক

আমার গাছে গাছে আজ একটি কুঁড়ি নেই
একটি পাতা নেই শুকনো ডালে ডালে বায়ুর ঘষা লেগে
আগুন জ্বলে ওঠে তীব্র লেলিহান
বাকল ছিঁড়েফেড়ে দুপুর ভেঙেচুরে আকাশ লাল করে
আমার গাছে আজ একটা ছোটো ফুল ফুটুক

আমার এ-আকাশ ছড়িয়ে আছে ওই
পাতটিনের মতো ধাতুর চোখ জ্বলে প্রখর জ্বালাময়
সে-তাপে গলে পড়ে আমার দশদিক
জল ও বায়ুহীন আমার আকাশের অদেখা দূর কোণে
বৃষ্টিসকাতর একটু মেঘ আজ জমুক

আমার কুঁড়েঘরে নেমেছে শীতকাল
তুষার জমে আছে ঘরের মেঝে জুড়ে বরফ পড়ে আছে
গভীর ঘন হয়ে পাশের নদী ভরে
বরফ ঠেলে আর তুষার ভেঙে আজ দু-ঠোঁটে রোদ নিয়ে
আমার কুঁড়েঘরে এ-ঘন শীতে কেউ আসুক।

আমাকে ভালোবাসার পর 

আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার,
যেমন হিরোশিমার পর আর কিছুই আগের মতো নেই
উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত।
যে কলিংবেল বাজে নি তাকেই মুর্হুমুহু শুনবে বজ্রের মত বেজে উঠতে
এবং থরথর ক’রে উঠবে দরোজাজানালা আর তোমার হৃৎপিন্ড।
পরমুহূর্তেই তোমার ঝনঝন-ক’রে ওঠা এলোমেলো রক্ত
ঠান্ডা হ’য়ে যাবে যেমন একাত্তরে দরোজায় বুটের অদ্ভুদ শব্দে
নিথর স্তব্ধ হ’য়ে যেত ঢাকা শহরের জনগণ।
আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার।
রাস্তায় নেমেই দেখবে বিপরীত দিক থেকে আসা প্রতিটি রিকশায়
ছুটে আসছি আমি আর তোমাকে পেরিয়ে চ’লে যাচ্ছি
এদিকে-সেদিকে। তখন তোমার রক্ত আর কালো চশমায় এত অন্ধকার
যেনো তুমি ওই চোখে কোন কিছুই দ্যাখো নি।
আমাকে ভালবাসার পর তুমি ভুলে যাবে বাস্তব আর অবাস্তব,
বস্তু আর স্বপ্নের পার্থক্য। সিঁড়ি ভেবে পা রাখবে স্বপ্নের চূড়োতে,
ঘাস ভেবে দু-পা ছড়িয়ে বসবে অবাস্তবে,
লাল টুকটুকে ফুল ভেবে খোঁপায় গুঁজবে গুচ্ছ গুচ্ছ স্বপ্ন।